শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আর এর প্রতিবাদে নিজেদের পরিবহন বন্ধ রেখেছে অনেকে পরিবহন মালিক। ফলে শনিবার সকালে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে দেখা দিয়েছে পরিবহনের তীব্র সংকট। সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য মেইন রোডে উঠেই অনেকে অবাক হয়ে যান। রাস্তায় অধিকাংশ পরিবহনের অনুপস্থিতি দেখে অনেকে তখনই জানতে পারেন শুক্রবার রাতে সরকারের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কথা। নগরীর বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডে দেখা যায় শত শত অফিসমুখী যাত্রীর ভীড়। কিন্তু গাড়ি নেই। নিরুপায় হয়ে অনেককে রিকশায় এমনকি মাছের পিকআপে করেও গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। এদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন। বেলায়েত হোসেন জানান বাসের ভাড়া না বাড়িয়ে হঠাৎ করে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে। এত দাম দিয়ে জ্বালানি কিনে একই ভাড়ায় তাদের পক্ষে গাড়ি চালানো সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। উল্লেখ্য শুক্রবার রাতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেখানে পেট্রোলের দাম প্রতি লিটারে ৪৪ টাকা, অকটেনের দাম প্রতি লিটারে ৪৬ টাকা এবং ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়ে। বর্ধিত মূল্য অনুযায়ী প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম বর্তমানে ১৩০ টাকা, এক লিটার অকটেনের দাম ১৩৫ টাকা এবং এক লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম হয়েছে ১১৪ টাকা। শুক্রবার রাতে নতুন দাম ঘোষণার পর সারাদেশেল পেট্রোলপাম্পগুলোতে ভীড় করতে থাকে ক্রেতারা। এদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)-এ পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে এই দাম পুনর্নির্ধারণ করা হলো। সেইসাথে আন্তর্জাতিক বাজাড়ের তুলনায় দেশে মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।কিন্তু পরিবহন মালিক ও সাধারণ মানুষ বলছে মূল্য বাড়ানোর আগে পরিবহন মালিক ও সংশ্লিষ্টদের সাথে বসে আলোচনার প্রয়োজন ছিলো। তাহলে হঠাৎ করে দেশের মানুষকে এতটা ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
Leave a Reply