বাংলা চলচ্চিত্রের যুবরাজখ্যাত স্বপ্নের নায়ক সালমান শাহ ইহকাল ত্যাগ করেছেন আজ থেকে ২৬ বছর আগে। কিন্তু তার রেখে যাওয়া কর্মগুণে তিনি আজো চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে হয়ে আছেন সমান জনপ্রিয়। গেলো কয়েক দশকে অনেককেই হারিয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র। তবে কিংবদন্তীতুল্য চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যু যেন ২৬ বছর পরও দগ্ধ করে তার ভক্তদের। এখনো তার ছবি প্রচার হলে হুমড়ি খেয়ে পড়েন অগণিত দর্শক। সালমান শাহর পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় নানাবাড়িতে তার জন্ম। বাবার নাম কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। ছোটবেলায় গান গাইলেও তার অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশুশিল্পী হিসেবে। তবে অত্যন্ত সুদর্শণ এই নায়কের সিনেমায় অভিষেক হয় ১৯৯৩ সালে। ছবির নাম কেয়ামত থেকে কেয়ামত। সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত এ ছবিতে তিনি নায়িকা হিসেবে পান আরেক নবাগত নায়িকা মৌসুমীকে। যে ছিলো সালমান শাহেরই স্কুল জীবনের সহপাঠী। ছবিটি মুক্তির পর দেশজুড়ে যেন ঝড় বয়ে যায়। নতুন নায়ক সালমান শাহের মোহে পড়ে যায় চলচ্চিত্রাঙ্গন। সিনেমাটি সুপার হিট হওয়ায় প্রথম ছবিতেই তারকাখ্যাতি পেয়ে যান সালমান। ফলে মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারে সালমান শাহ অভিনয় করেন ২৭টি ছবিতে। আর বলাবাহুল্য সবগুলো ছবিই ছিলো হিট সুপারহিটের তালিকায়। একের পর এক হিট সিনেমার মাধ্যমে সালমান শাহ তখন হয়ে যান তরুণ চলচ্চিত্র প্রজন্মের আইকন আর নির্মাতাদের ভরসা। সালমান শাহ অভিনিত অন্তরে অন্তরে’, তোমাকে চাই’ ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ চাওয়া থেকে পাওয়া’,,সুজন সখি’, ‘বিক্ষোভ’, ‘‘আশা ভালোবাসা’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নাই’, ‘জীবন সংসার’, ইত্যাদি ছবিগুলো বাংলা চলচ্চিত্রের অমূল্য সম্পদ হয়ে আছে আজও। কিন্তু ক্যারিয়ারের চলমান বসন্তের মধ্যেই হঠাৎদ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহর মৃত্যু খবর পায় দেশবাসী। এদিন নিজ বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটিত হয়নি ২৬ বছর পরও । তিনি খুন হয়েছেন নাকি আত্মহত্যা করেছেন সে প্রশ্নের উত্তর আজও অজানা। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবশেষ প্রতিবেদনে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
Leave a Reply