দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে শ্রেষ্ঠ দেশ কোনটি? অত্যন্ত গর্বের সাথে আপনি এখন উত্তর দিতে পারবেন বাংলাদেশ। কারণ ১৯ বছর পর সাবিনা কৃষ্ণাদের হাত ধরে সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা এখন বাংলাদেশের দখলে। নারী ফুটবল দলের এ অসমান্য সাফল্যে অভিনন্দনের জোয়াড়ে ভাসছে নারী ফুটবল দল।
সাফে অংশ নেয়ার আগে নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে জানিয়েছিলেন বর্তমান নারী ফুটবলাররা এখন বেশ পরিপক্ক। নেপালে এর প্রতিফলন দেখতে পাবেন দর্শকরা। কোচের কথার পুরোপুরি অনুসরণই করেছেন তার শিষ্যরা। এবার সাফ চ্যাম্পিয়শীপের প্রায় প্রতিটি খেলায় বিশেষ করে ভারত এবং নেপালের সাথে আধিপত্য বজায় রেখে খেলেছে সাবিনারা। বল নিয়ন্ত্রণ, পাসিং, সংঘবদ্ধ আক্রমণ, প্রতিপক্ষের আক্রমণ প্রতিরোধ সব ক্ষেত্রেই বিশেষ মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে বাংলার মেয়েরা। আর তার ফল হিসেবে অধরা শিরোপাটিও নিজেদের করে নিলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ফুটবলে এত বড় অর্জন দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছিল আজ থেকে ১৯ বছর আগে। ২০০৩ সালে আরিফ খান জয়- আমিনুলরা সাফ চাম্পিয়নশীপ ঘরে তুলেছিলেন সেবার। তারপর দীর্ঘ ১৯ বছরে পুরুষ ফুটবল দল আর সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ২০১০ সাল থেকে নারী সাফ চাম্পিয়শিপ শুরু হলে প্রতিটিতেই অংশ নেয় বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। এর মধ্যে একবার ফাইনালে, একবার সেমিফাইনালে উঠতে স মর্থ্য হয় মেয়েরা। আর বাকিগুলোতে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয় মেয়েদের। তবে এবার কাঠমুন্ডুতে অপরাজিত চাম্পিয়ন হয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলার বাঘিনীরা। শুধু তাই নয় সিনিয়র ফুটবলে কখনোই ভারত ও নেপালকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সেই আক্ষেপও ঘুচেছে। গ্রুপ পর্বে ভারতকে এবং ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে এই দুটি দেশের বিরুদ্ধেও জয়ের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ ফুটবল। ফাইনালে রেফারি যখন শেষ বাঁশি বাজালেন ততক্ষণে গুনে গুণে তিনটি গোল করে ফেলেছেন কৃষ্ণা রাণী সরকার ও শামসুন্নাহার জুনিয়ররা । মুহুর্তেই উল্লাসে ফেটে পড়েন সাবিনারা। রাত এগারোটা পর্যন্ত নেচে গেয়ে করেছেন বিজয় উদযাপন। উল্লাসে মেতে উঠেন দেশের লাখো কোটি ফুটবল প্রেমী। এদিকে সাবিনা কৃষ্ণাদের এ সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। অভিনন্দন জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। অভিনন্দনের পাশাপাশি নারী ফুটবলারদের বড় ধরনের একটি সংবর্ধনা সেই সাথে ফুটবলারদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির প্রত্যাশাও করছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
Leave a Reply