বুধবার রাতে বাফুফে ভবনে সাফ বিজয় করে দেশের জন্য গৌরব নিয়ে আসা নারী ফুটবলারদের বরণ করেছে বিসিবি। তবে সে বরণ করায় খুশি হতে পারেনি দেশের মানুষ। খুশি হতে পারেনি দেশের লাখো কোটি ক্রীড়াপ্রেমী। এমনকি দেশের জন্য ট্রফি নিয়ে আসা খেলোয়াড়রাও চরম অপমান বোধ করেছেন এতে। আসলে কি ঘটেছিলো বাফুফের সংবাদ সম্মেলনের দিন?
বাফুফের ঘটনার ১ম অংশ :
বাফুফে ভবনে সাফ জয়ীদের বরণ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। খুব সঙ্গত কারণেই তুলনামূলক সাংবাদিক ও অতিথিদের ভীড় ছিলো বেশি। দীর্ঘ চার ঘণ্টার সফর শেষে সাবিনা কৃষ্ণারাও ছিলেন ক্লান্ত। কিন্তু সে অনুযায়ী বাফুফের প্রস্তুতি ছিলো না একেবারেই। খুব সাদামাটা এবং গতানুগতিক ছিলো সাফ জয়ীদের নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন। আয়োজনে অব্যবস্থাপনা ছিলো চোখে পড়ার মতো। এমনকি বাফুফে প্রেসিডেন্ট একাধিকবার উঠে চলেও যেতে চেয়েছিলেন মঞ্চ ছেড়ে। অবশেষে রাত সাড়ে আটটায় যখন সংবাদ সম্মেলন শুরু হলো তখন মঞ্চে উপস্থিত বাফুফে প্রেসিডেন্ট সালাউদ্দিন আহমেদ,সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুস সালাম মুর্শেদী, বাফুফের মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, ঢাকা ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি,বিজয়ী দলের গর্বিত অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, সাফজয়ী কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন এবং আরো একজন বাফুফে কর্মকর্তা। এদের দুচারজনের বক্তব্যের পর কথা শুরু করেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।
বাফুফের ঘটনার ২য় অংশ :
কিন্তু কোচের কথা শেষ না হতেই কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। তার সঙ্গে ছিলেন সচিবসহ আরো কয়েকজন। ঘটনার শুরু এখান থেকেই। প্রতিমন্ত্রীকে দেখে চেয়ার ছেড়ে দেন কোচ ছোটন। কোচ উঠে যাওয়ায় চেয়ার ছেড়ে দেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনও। এরপর প্রতিমন্ত্রী এসেই চেয়ার টান দিয়ে সঙ্গীসহ বসে পড়লেন। আর বিজয়ী দলের কোচ আর অধিনায়ক পেছনে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন। সংবাদ সম্মেলনের বাকিটা সময় এভাবেই দাঁড়িয়ে কাটিয়েছেন তারা। মাঝে সাংবাদিকদের কেউ কেউ কোচ আর অধিনায়কের অনুভূতি জানতে চাইলে তারা পেছন থেকে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে অনেক কষ্টে তাদের অনুভূতি জানান। তবে তাদের চেহারায় ভেসে উঠছিলো অপমানের আগুণ। সাফ জয় করে এসে ঘর্মাক্ত দেহে দাঁড়িয়ে থেকে অনুভূতি জানাতে হবে এমনটা তারা কখনোই ভাবেননি।
শেষ কথা :
সাফ বিজয়ী নারী ও কোচকে দাঁড় করিয়ে রাখার ঘটনাটি সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেছে দেশবাসী। আর তারপরই নিন্দার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। প্রশ্ন উঠে বাফুফে ও এর কর্তাব্যক্তিদের কার্যক্রম নিয়ে। তাদের প্রশ্ন কেন তাদের জন্য সামান্য বসার জায়গাটুকু করা গেলো না? কেন তাদের এভাবে দাঁড় করিয়ে রেখে অপমান করা হলো? কেন বিজয়ীদের না বসিয়ে বাফুফের কর্তাব্যক্তিরা চেয়ার দখল করে রাখলেন? সৌজন্যতার খাতিরে চেয়ার ছেড়ে উঠে যাওয়া খেলোয়াড় ও কোচকে কেন চেয়ারের ব্যবস্থা করে আবার বসার সুযোগ দেওয়া হলো না? আর কেনইবা এসব ননসেন্স ব্যক্তিদের এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়?
Leave a Reply