দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হলো। গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলার সীমান্তবর্তী মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে নবনির্মিত সেতুটি উদ্বোধনের পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। দেশের প্রথম ও একমাত্র ৬ লেনের সেতুটি ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন। নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. শামীমুজ্জামান, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী, মধুমতি সেতুর প্রকল্প পরিচালক শ্যামল ভট্টাচার্য, নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য বিএম কবিরুল হক, নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাসহ প্রশাসনিক ও অন্যান্য গণমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে নড়াইলবাসীকে দেওয়া কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন ‘ নড়াইলবাসীকে কথা দিয়েছিলাম, কথা রেখেছি। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলার সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ সহজ করতে ২০০৮ সালে এক নির্বাচনি বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ সেতুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এদিকে সোমবার দুপুরে উদ্বোধনের পর রাতে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মধুমতি সেতু। বহুল কাঙ্ক্ষিত এ সেতু চালুর মধ্য দিয়ে বহতা মধুমতীর স্রোতধারায় বিভক্ত নড়াইল ও গোপালগঞ্জ জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন হয়েছে। এ সেতুর ফলে নড়াইল, যশোর, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলার মানুষের ঢাকায় যাতায়াতে দূরত্ব কমেছে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ কি.মি। স্থানীয়রা আশা করছেন, মধুমতী সেতুর মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হবে। ১২টি পিলারের উপরে নির্মিত এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। সেতুটিকে দৃষ্টিনন্দন করেছে এটির ১৫০ মিটার স্টিলের নেলসন লসি আর্চ। ধনুকের মতো বাঁকা এ স্প্যানটি তৈরি করেছে জাপানের নিপ্পন কোম্পানি। সেতুতে মোট ২টি এবাডমেট, ১৩টি স্প্যান ও ১৬০টি গার্ডার রয়েছে। সেতুর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ২৬ কিলোমিটার। এ সেতুটি সরাসরি যুক্ত হবে এশিয়ান হাইওয়েতে। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তত্ত্বাবধানে ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় এ সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদার। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৬০ কোটি টাকা।
Leave a Reply