সরিষাবাড়ীতে তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে সাবেক স্বামীসহ দলবদ্ধ ধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। নিহত সেই স্ত্রীর নাম সোনিয়া আক্তার। ঘটনাটি ঘটেছে সরিষাবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে। এ ঘটনায় নিহত তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর সাবেক স্বামী মাহিমসহ দুই বন্ধু পল্লব হাসান(১৮) ও সাকিব হোসেন(১৬)কে আটক করেছে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ। নিহতের পরিবার, পুলিশ এবং স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের গেন্দার পাড়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার মেয়ে সোনিয়া আক্তার (১৬) তার নানাবাড়ী একই উপজেলার আওনা ইউনিয়নের গোয়ালবাথান গ্রামের বাবলু মিয়ার বাড়ীতে থেকে বাটিকামারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়াশুনা করতো। ওই স্কুলে আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে উপজেলার একই ইউনিয়নের কুলপাল গ্রামের রিপন মিয়ার ছেলে মাহিম(১৯) এর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জডিয়ে পড়ে এবং দু-জনের পরিবারের অজান্তেই ৭ মাস আগে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই বিভিন্ন সময় সোনিয়ার বাবার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা দাবি করে স্বামী মাহিম। স্বামীর দাবিকৃত যৌতুকের টাকা এনে দিতে না পারায় সোনিয়াকে মারধর করে পাষন্ড স্বামী। নিরুপায় হয়ে স্বামীর আবদার মেটাতে সোনিয়ার নানা বাবলু মিয়া বাড়িতে থাকা ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণের গহনা ও ১৭ হাজার টাকা গোপনে মাহিমকে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিক বৈঠকে টাকা ও স্বর্ণের গহনা ফেরত দিতে বলায় মাহিম লোক লজ্জায় সোনিয়াকে সম্প্রতি ডিভোর্স দেয়। কিন্তু ডিভোর্সের পরেও মাহিম তার বন্ধুদের মাধ্যমে সোনিয়ার সাথে সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে গেলো বৃহস্পতিবার মাহিম তার বন্ধু পল্লবের বাসায় নিয়ে সোনিয়াকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষন করে। একর্পায়ে সোনিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়লে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয় তারা। পরে মাহিমের তিন বন্ধু রাত আনুমানিক ১১টার দিকে প্রথমে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোনিয়ার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার সোনিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সোনিয়ার মৃতদেহ রেখে তিন বন্ধু পালিয়ে যায়। শনিবার সোনিয়ার পরিবার জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী সার্জন ও বিভাগীয় প্রধান ডা: হারুন অর রশীদ এর মাধ্যমে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন। সন্ধা ৬ টায় গেন্দার পাড়া গ্রামের পিতৃালয়ে তার দাফন সম্পন্ন হয়। এ ব্যাপারে নিহত সোনিয়ার বাবা ফিরোজ মিয়া জানান ‘ যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের পর ডিভোর্স দেয়ার পরও আমার মেয়ে সোনিয়া আক্তারকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় সাবেক স্বামী মাহিম। তারপর তার বন্ধুদের নিয়ে বন্ধু পল্লবের বাসায় দলবদ্ধ ধর্ষন করে মুখে বিষ দিয়ে হত্যা করেছে।’ এসময় তিনি এর বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান। জানতে চাইলে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী সোনিয়াকে হত্যার ঘটনায় জডিত সন্দেহে সাবেক স্বামী মাহিমসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল আজিজ- সরিষাবাড়ি থেকে
Leave a Reply