জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সারকারখানার জিএম প্রশাসনের সাথে উৎশৃঙ্খল আচরণে জড়িত থাকায় সিবিএর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ জনকে শোকজ করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার ১৩ জনকে পৃথক দুটি নোটিশের মাধ্যমে বদলী ও শোকজ করেন বিসিআইসি’র ডিসিওপি প্রশাসন-কামরুজ্জামান শেখ ও যমুনা সার কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক প্রশাসন আশরাফুল ইসলাম। শোকজ ও বদলীর নির্দেশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন যমুনা সারকারখানার মাষ্টার টেকনিশিয়ান ময়েন উদ্দিন, মাষ্টার টেকনিশিয়ান এ কে এম মাহবুবুর রহমান,মাষ্টার অপারেটর আব্দুস সালাম, কর্ণফুলী পেপার মিলস লিঃ ও যমুনা সারকারখানার কাগজকল হেলপার আবুল হোসেন। তাদেরকে শোকজ করে বদলির আদেশ দেন বিসিআইসির ডিসিওপি কামরুজ্জামান শেখ। অপরদিকে উৎশৃঙ্খলতার অভিযোগে জেএফসিএল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও মাষ্টার টেনিশিয়ান মোয়াজ্জেম হোসেন,সাধারণ সম্পাদক শাহ জাহান,এসটি-১ তুলা মিয়া,মাস্টার টেকনিশিয়ান হেলাল উদ্দিন,মাসুদ রানা,নূরে আলম খান,মাস্টার অপারেটর আব্দুস সালাম,কাগজ কল হেলপার ক্লীনার আবুল হোসেন, মাস্টার টেকনিশিয়ান এ কে এম মাহবুবুর রহমান, ময়েন উদ্দিন, এসটি-১ রসুল মিয়া,রেকর্ড সর্টার শাহীন হোসেন কে শোকজ করা হয়েছে। কারখানা সূত্রে জানা যায়, জেএফসিএল এর জিএম প্রশাসন দেলোয়ার হোসেনের এর সাথে উৎশৃঙ্খলার বিষয়টি তদন্ত কমিটি সনাক্ত করতে পারায় তাদের বিরুদ্ধে উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সহকারী ব্যাবস্থাপক (প্রশাসন) আশরাফুল ইসলাম।
জানা গেছে চলতি ২০২৩ ইং সালের ২ জানুয়ারি সার কারখানায় নির্ধারিত সময় সীমার পর বেশ কিছু কর্মকর্তা /কর্মচারী /শ্রমিক কারখানায় প্রবেশ করেন।এসময় কারখানার কিছু সংখ্যক শ্রমিক কারখানায় দেরিতে প্রবেশ করার সময় কারখানার কর্মরত নিরাপত্তা শাখার কর্মচারীরা প্রবেশ রেজিষ্টারে সময় উল্লেখ করে তাদের স্বাক্ষর করতে নির্দেশনা দেয় কর্তপক্ষ। বিষয়টি প্রশাসন বিভাগীয় প্রধান ঘটনা পর্যবেক্ষন করছিলেন। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টায় কাজে যোগদানের নির্ধারিত সময় থাকলেও ব্যাগিং সেকশনের মাষ্টার অপারেটর ও সিবিএ’র সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সদস্য ময়েন উদ্দিন সকাল ৯টায় কারখানার প্রধান ফটকে প্রবেশ করে।এ সময় জিএম প্রশাসন হাজিরা খাতায় সময় উল্লেখ করে স্বাক্ষর করতে বললে ব্যাগিং সেকশনের মাষ্টার অপারেটর ময়েন উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে যমুনা সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে বিষয়টি অবগত করলে তাৎক্ষণিক সিবিএর সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ও সাধারন সম্পাদক শাহজাহান আলী উত্তেজিত হয়ে অন্যান্য ৭০/৮০ জন শ্রমিক ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের পাশে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সমবেত হয়ে থাকেন। এর পর কর্মদিবস চলাকালে জিএম দেলোয়ার হোসেন প্রশাসনিক ভবনের নিচে নেমে আসলে সিবিএর সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
জিএম দেলোয়ার হোসেন কারখানার গাড়ী দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় সিবিএ’র সভাপতি ও সম্পাদক তাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে কারখানা থেকে হাটিয়ে হাটিয়ে বের করে দেন। এসময় মিছিল,বিভিন্ন শ্লোগানসহ নানা রকম কটুক্তি করে সিবিএ নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় বিসিআইসির জিএম (পার্সেল) শহিদুল ইসলাম কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। যমুনা সার কারখানার সিবিএ সভাপতি ও সম্পাদকের বিরুদ্ধে জিএম প্রশাসনকে লাঞ্চিতের ঘটনার ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন সারকারখানার ব্যাবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ খান।
এ বিষয়ে জেএফসিএল এর জিএম (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন জানান, জেএফসিএল এর কতিপয় কর্মচারী উৎশৃঙ্খলতায় জড়িত মর্মে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সিবিএ’র সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক সহ ১৩ জনকে শোকজ এবং এর মধ্যে ৪ জনকে শোকজসহ অন্যত্র বদলী করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল আজিজ- সরিষাবাড়ী থেকে
Leave a Reply